আফগানিস্তানের চ্যালেঞ্জ, প্রস্তুত টিম টাইগার
শক্তি ও সামর্থ্যে খুব কাছাকাছি দুই দল
শেষ দেখায় হেরে যায় বাংলাদেশ
রাহুল রাজ ।। প্রথম দুই বিশ^কাপের ট্রফি জয় করা ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবারের বিশ^কাপে খেলতে পারছে না। খবরটা অনেকের কাছেই প্রথমে বিশ্বাস যোগ্য ছিলো না। কিন্তু এটাই নিয়তি। এটাই সত্য! গত শনিবার বাছাইপর্বের ম্যাচে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে সাত উইকেট হেরে বিশ্বকাপে খেলার দৌড় থেকে ছিটকে যায় ক্যারিবিয়ানরা।
ক্রিকেট ভক্তদের কাছে এটা বড় ধাক্কার থেকেও কম না। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ছিটকে যাবার দিন, ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে পৌঁছেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। সেখানে গেছেন মোট ১৩ ক্রিকেটার, তবে ছিলেন না ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল। কেননা বাঁহাতি এই ওপেনার আগেই অবস্থান করছিলেন চট্টগ্রামে। অবশ্য দলের সঙ্গে একই বহরে গিয়েছেন আরেক অভিজ্ঞ ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান।
আগের এগারো মুখোমুখির প্রথম ও শেষ দুটিতেই বাংলাদেশকে হারিয়েছিল আফগানিস্তান। তাই বলে পঞ্চাশ ওভারের ক্রিকেটে বাংলাদেশের বিপক্ষে তাদের রেকর্ড যে খুব ভালো তা বলার সুযোগ নেই। এগারো বারের দেখায় সাতটিতে বাংলাদেশ জিতেছে। তাই মাঠে নামার আগেই বলে দেয়া যায় বাংলাদেশই ফেভারিট। তবে, সীমিত পরিসরের ক্রিকেটে আফগানিস্তান যে দুরন্ত গতিতে এগিয়েছে তাতে তাদের অবহেলা করলেই বিপদ।
আইসিসি ওয়ানডে সুপার লিগের ম্যাচে আগে ব্যাটিং করে আফগানিস্তান ২১৫ রানে আটকে গেলেও বাংলাদেশ ওই রান তাড়া করতে নেমে ৪৫ রানে হারায় ৬ উইকেট। সেখান থেকে আফিফ ও মিরাজের অবিচ্ছিন্ন ১৭৪ রানের জুটিতে ম্যাচ জিতে নেয় বাংলাদেশ। পরের ম্যাচ জিতে বাংলাদেশ সিরিজ নিশ্চিত করলেও শেষ ম্যাচ হেরে যায় ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে। এক বছর পর একই মঞ্চে আবার মুখোমুখি দুই দল।
এবারের লড়াইটা আইসিসির কোনও প্রতিযোগিতার অংশ নয়। তবে র্যাংকিংয়ে বড় প্রভাব রাখবে। আফগানিস্তানকে ৩-০ ব্যবধানে হারাতে পারলে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো র্যাংকিংয়ে পাঁচে উঠবে। সঙ্গে রেটিং পয়েন্টও প্রথমবারের মতো একশ পেরোবে। সেই সুযোগটি বাংলাদেশ নিশ্চিতভাবেই নেবে। ঈদের ছুটি কাটিয়ে এখন আবার ব্যাক টু বিজনেস। ঢাকার মাটিতে একমাত্র টেস্টে আফগানিস্তানকে স্রেফ উড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। ৫৪৬ রানের রেকর্ড ব্যবধানে জিতেছিল। যা ৮৯ বছর পর টেস্ট ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ব্যবধানে পাওয়া জয়।
নিজেদের সুপারস্টার রশিদ খানকে ছাড়া খেলেছিল আফগানরা। চোট থাকায় মাঠে নামতে পারেননি রশিদ। সীমিত পরিসরে রশিদ ফিরছেন স্বরূপে। তার সঙ্গে রহমানউল্লাহ গুরবাজ, মুজিব উর রহমানরাও এসেছেন। এই দলটি সংযুক্ত আরব আমিরাতে সিরিজের প্রস্তুতিও নিয়েছে। সীমিত পরিসরের দুই ফরম্যাটেই শক্তি ও সামর্থ্যে খুব কাছাকাছি দুই দল। তাই ধারনাই করা যায় ম্যাচগুলো হবে কঠিন ও রোমাঞ্চকর।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ-আফগানিস্তানের তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ শুরু ৫ই জুলাই। আফগানিস্তান দল ঢাকায় টেস্ট খেলে আবুধাবিতে চলে গিয়েছিল। ১৪ দিনের ক্যাম্প শেষে ফিরে এসেছে ঢাকায়।
এখন পর্যন্ত ৫০ ওভারের ফরম্যাটে ৭ বার মুখোমুখি হয়েছে দুই দল। যেখানে বাংলাদেশ জয় পেয়েছে ৪ বার আর হেরেছে ৩ ম্যাচে। এর মধ্যে অফগানদের বিপক্ষে সবশেষ হারের স্মৃতি এখনো জ্বলজ্বলে। গেল বছর চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজের শেষ ম্যাচ হেরে যায় তামিম ইকবালের দল।
এবার সেখান থেকেই শুরু হচ্ছে নয়া সিরিজ। প্রতিটি ম্যাচই হবে সাগরিকায়। আইসিসির সর্বশেষ হালনাগাদকৃত ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থান সপ্তম, রেটিং পয়েন্ট ৯৮। এদিকে ১০১ পয়েন্ট নিয়ে ছয় নম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং সমান পয়েন্ট নিয়ে পাঁচ নম্বরে ইংল্যান্ড। তবে আসন্ন ওয়ানডে সিরিজে আফগানদের হোয়াইটওয়াশ করতে পারলে ৩ রেটিং পয়েন্ট বাড়বে বাংলাদেশের, যা গিয়ে দাঁড়াবে ১০১-এ।
ফলে ইংল্যান্ড ৬ ও দক্ষিণ আফ্রিকা তালিকার ৭ নম্বরে নেমে যাবে। আর তাতেই দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইংল্যান্ডকে টপকে টেবিলের ৫ নম্বরে উঠে আসবে বাংলাদেশ। তবে সিরিজটি ২-১ ব্যবধানে জিতলে, রেটিং-র্যাঙ্কিং কোনোটাই পরিবর্তন হবে না বাংলাদেশের। যদি ২-১ ব্যবধানে আফগানিস্তান সিরিজ জিতে তাহলে আবার ৩ রেটিং হারাবে বাংলাদেশ।
যদিও তখনো বাংলাদেশের অবস্থান থাকবে ৭ নম্বরেই। আর বাংলাদেশ যদি হোয়াইটওয়াশ হয় তাহলে র্যাঙ্কিংয়ের ৮ নম্বরে নেমে যাবে। তখন ৭ নম্বরে উঠে যাবে আফগানিস্তান। তবে সিরিজে আরেক প্রতিপক্ষ হতে পারে বৃষ্টি। সিরিজে রয়েছে বৃষ্টির পূর্বাভাস।
স/এষ্