এম এম রহমান মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি : জেলা জুড়ে শখের বসে কবুতর পালন স্বাবলম্বী হয়েছেন অনেকে। জেলা শহরেও বাণিজ্যিকভাবে কবুতর পালন করে শতাধিক যুবক স্বাবলম্বী হয়েছে। তাদের দেখাদেখি হাজারও যুবক প্রশিক্ষণ নিয়ে বিভিন্ন জাতের কবুতর পালন করছে বলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ জানিয়েছে।
বিভিন্ন দোকান, শো রুম ও ফেসবুকের মাধ্যমে চলছে এসব কবুতর কেনাবেচা। প্রতি জোড়া কবুতরের দাম দুই হাজার টাকা থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত আছে । শখের বসে এবং বাণিজ্যিকভাবে কবুতর পালনে আগ্রহী হওয়ায় এলাকায় এখন কবুতর পালনকারী ও ব্যবসায়ীর সংখ্যা বেড়েছে। মুন্সীগঞ্জে কবুতর পালনকারী গঠন করেছে মুন্সীগঞ্জ পিজিয়ন এসোসিয়েশন নামক সংগঠন। এই সংগঠনে প্রায় ৫২ জন কবুতর পালনকারী যুক্ত আছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বাসাবাড়ীতে শখের বসে বহু যুবক পালন করছেন বিভিন্ন জাতের কবুতর। বাসার ভিতরে, বাসার বাইরে বক্স তৈরী করে, অনেকে ছাদের উপর কাঠের, লোহার খাচা তৈরী করে পালন করছেন কবুতর। খাবার হিসেবে কবুতরগুলোকে খাওয়ানো হচ্ছে তিষি, সারিষা, ভুট্রা, ডাবলি, ঘাসের দানা, ধান, গম, কেইজ, সূর্যমুখীর বিচি, কুসুমফুলসহ অন্যান্য খাবার।
কবুতর পালন এখন লাভজনক হওয়ায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ১১৫ জন যুবক বাণিজ্যিক এবং শখের বসে অন্তত ২০ জাতের কবুতর পালন করছেন। সেখানে দেশি কবুতরের পাশাপাশি বিভিন্ন বিদেশি জাতের অন্তত আট হাজার ডিমপাড়া কবুতর রয়েছে।
এসব কবুতর খাবার বিক্রির জন্য মুন্সীগঞ্জ শহরে একাধিক কবুতর এবং কবুতরের খাবারের বিক্রির দোকান গড়ে উঠেছে। ভোর সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কবুতর প্রেমীরা তাদের কবুতরের জন্য খাবার কিনতে আসনে। কখনও আসেন কবুতর বিক্রি করতে।
কবুতর পালনকারী মো: মোশারফ হোসেন জানান, শখের বসে এই পেশায় আসার পর আজ আমার মূলধন দাঁড়িয়েছে পাঁচ লাখ টাকায়। বিদেশি জাতের প্রতিটি কবুতর ২১ দিনের মাথায় দুটি করে ডিম দেয়। এই ডিম থেকে দেশি কবুতরের মাধ্যমে বাচ্চা ফোটানো হয় ।
অনেক ব্যবসার চেয়ে এই ব্যবসা লাভজনক বলে দাবি করেন তিনি। তিনি আরো জানান, স্মার্ট ফোনের মাধ্যমে ছবি তুলে ফেসবুকে দিয়ে বেচা বিক্রি করি। এতে ক্রেতা ও লাভ দুটিই ভালো পাওয়া যায়।
মিরকাদিম এলাকার আরিফ জানান, লক্ষা, গ্রীবাজ, লোটন, সিরাজী, ময়ূরী ও সিলভার সিরাজী জাতের ৫০টি কবুতর রয়েছে তার খামারে। দেশি সাধারণ জাতের চেয়ে এসব কবুতরের দামও অনেক বেশি।
চাহিদাও রয়েছে বাজরার। দু”বছর আগে দশ হাজার টাকার কবুতর কিনে পেশা শুরু করি। এখন দেশী, বিদেশীসব মিলিয়ে ১০৭ টি কবুতর রয়েছে তার। কবুতরগুলো বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ৮ লাখ টাকা।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: মো: জাহাঙ্গীর আলম জানান, দেশি উন্নত প্রজাতির লক্ষা, গ্রীবাজ, লোটন, সিরাজী, ময়ূরী, জিলানী, পরশ, শোয়া, চন্দন, ক্যাপটান, র্যান, রান, বাজরিকা, মনিরা, কালদম, কিং ও সিলভার সিরাজী জাতের প্রতি জোড়া কবুতরের দাম দুই হাজার টাকা থেকে ছয় হাজার টাকা পর্যন্ত হয়।
অনেকে শখের বসে করে এখন তারা বানিজ্যিকভাবে পালন করছে কবুতর। কবুতর পালনে ক্ষতি বা লোকসানের সম্ভাবনা কম। ফলে কবুতর পালনে যুবকদের আগ্রহ বেড়েছে।
স/ম