শ্বাসরুদ্ধ ম্যাচে টাইগারদের জয়
রাহুল রাজ ।। শামিম পাটোয়ারি ও তাওহিদ হৃদয়ের পঞ্চাশ রানের জুটিতে আফগানিস্তানের ঝুলিতে থাকা ম্যাচ নিজেদের করে নেয় বাংলাদেশ। শরিফুলের এর ব্যাট থেকে শেষ জয় সূচক রান আসতেই টাইগার ভক্তদের বুকের ভিতরে আটকে থাকা নিশ্বাস জয়ের উল্লাসে বেরিয়ে আসে।
পেন্ডুলামের মত দুলতে থাকা ম্যাচের ভাগ্য নিজেদের দিকে ফিরিয়েছেন দায়িত্বশীল ব্যাটিং। তাওহিদ হৃদয়ের চোখ ধাধানো শটে আফগান খেলোয়াড়েরা ব্যস্ত ছিলো বলের পেছনে দৌড়াতে। শেষ ওভারে দরকার ছিলো ৬ বলে ৬ রান।
হিসাব খুব সহজ মনে হলেও ম্যাচের শুরুতে বল ও রানের ব্যবধান ছিলো বিস্তর। যখন চার বলে দুই রানের প্রয়োজন তখন মেহেদীর, তাসকিন ও নাসুম আউট হয়। করিম জানাদের হ্যাট্রিকে আবার আটকে যায় টাইগার ভক্তদের নিশ্বাস। অপর প্রান্তে অসহয় দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলো ম্যাচ সেরা ৪৭ রানে অপরাজিত তাওহিদ হৃদয়।
শরিফুল ক্রিজে এসে ১ বল বাকি থাকতেই বাউন্ডারি হাকিয়ে জয় নিজেদের করলে উল্লাসে ফেটে পড়ে পুরো বাংলাদেশ। সিলেটে বাংলাদেশের ম্যাচ মানেই যেন কানায় কানায় পূর্ণ গ্যালারি। আরও একবার যার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে আফগানিস্তানের বিপক্ষে চলতি টি-টোয়েন্টি সিরিজে।
বৃষ্টির শঙ্কা থাকলেও দর্শকের ঢল নেমেছে স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে। ম্যাচ শুরুর আগে থেকেই নানা সাজে নানা বেশে লাক্কাতুড়া চা বাগান সংলগ্ন স্টেডিয়ামটিতে প্রবেশ করেন তারা। দিন শেষে তাদের কষ্ট দূর হয় জয়ের উল্লাসে। ১৫৫ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুতেই রনি তালুকদার আউট হলে চাপে পড়ে টিম টাইগার।
সেই চাপ আরো বাড়ে নাজমুল হোসেন শান্ত (১৪), লিটন দাস (১৮) ও সাকিব আল হাসান (১৯) রানে ফিওে গেলে। এর পর, শামিম পাটোয়ারি ও তাওহিদ হৃদয়ের জুটিতে ম্যাচে ফেরে বাংলাদেশ। মুহুর্তে মুহুর্তে ম্যাচের রং বদলেছে। তবে দিন শেষে জয়ের বন্দরে পৌচ্ছে যায় বাংলাদেশ। দুই ম্যাচ সিরিজে এগিয়ে যায় ১-০ ব্যবধানে।
এর আগে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের ইঙ্গিত ছিল আফগানিস্তানের ব্যাটিংয়ে। তবে পরপর তিন ওভারে উইকেট হারিয়ে এরপর তারা বেশ ধুঁকছিল। সেখান থেকে দলকে জোর কদমে এগিয়ে নিয়ে গেছেন অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নবি।
তিনি পেয়েছেন আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির চতুর্থ ফিফটি। এছাড়া ১৮ বলে আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের ৩৩ রানের ক্যামিও সফরকারীদের লড়াকু পুঁজি এনে দিয়েছে। নির্ধারিত ওভার শেষে ৭ উইকেটে অতিথিরা সংগ্রহ করে ১৫৪ রান।
ম্যাচের শুরুতে দ্রুত রান তুললেও, ম্যাচের মাঝামাঝিতে তারা কিছুটা হোঁচটই খেয়েছিল। কিন্তু শেষ ৫ ওভারে আফগানিস্তান তুলেছে ৬০ রান। এতে অবশ্য নবির চার-ছক্কার সঙ্গে বাড়তি হিসেবে ছিল টাইগারদের বিশৃঙ্খল ফিল্ডিং। শুরু থেকে বডি ল্যাঙ্গুয়েজ এবং প্রাণপণে চেষ্টা করতে থাকা ফিল্ডার শেষদিকে খেই হারিয়েছেন। ফলে রান-আউট হাতছাড়া হওয়া ছাড়াও অতিরিক্ত রান পেয়েছে সফরকারীরা।
গতকাল সিলেটে বৃষ্টির শঙ্কা মাথায় নিয়ে টসে নামে দল দুটির অধিনায়করা। পরবর্তীতে টস জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশের হয়ে সাকিব সর্বোচ্চ দুটি উইকেট নেন। এছাড়া মুস্তাফিজ, শরীফুল, নাসুম ও মিরাজ নিয়েছেন একটি করে উইকেট।
স/এষ্