তিস্তার পানি আবারো বাড়ছে, নিম্ন অঞ্চল প্লাবিত
লাভলু শেখ, লালমনিরহাট থেকে।। উজানের ঢল ও টানা বৃষ্টিতে লালমনিরহাটের তিস্তা নদীর পানি ক্রমান্বয়ে বাড়তে শুরু করেছে। বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার কাছাকাছি অবস্থান করছে। পানি বেড়ে যাওয়ায়। নিম্ন অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। গতকাল রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৩টায় তিস্তা পয়েন্ট পানির সমতল ৫২.০৭ মিটার (বিপদসীমা ৫২.১৫ মিটার) যা বিপদসীমার ০৮ সে.মি নিচে। ফলে তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত। পানির চাপ কমাতে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪ টি জলকপাট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, তিস্তার পানি বৃদ্ধির ফলে লালমনিরহাটের ৫ উপজেলার তিস্তা তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করে। চর এলাকার রাস্তাঘাট তলিয়ে যায়। তিস্তার পানি বেড়ে যাওয়ায় হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী, দোয়ানী, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর, সিঙ্গামারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না, চর সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ী। কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি।
আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, কালমাটি, রাজপুর, গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তা নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের পরিবারগুলো পানিবন্দী হয়ে পড়েন। কিন্তু রোববার সকাল থেকে আবারও পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন করে বন্যার আশংকা করছেন। সেই সাথে গরুর প্রধান খাদ্য খড় ভিজে যাওয়ায় তারা বিপাকে পড়েছেন গবাদি পশু নিয়ে। এদিকে কমে যাওয়া তিস্তার পানি বৃদ্ধির খবরে আবারও চিন্তায় পড়েছেন তিস্তাবাসী।
আদিতমারী উপজেলা মহিষখোঁচা ইউনিয়নের তিস্তা গোবর্ধন চরবাসীরা জানান, শনিবার বিকাল থেকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। সন্ধ্যার মধ্যেই তিস্তা নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করে। আর রাতেই সেই পানি বিপদসীমার কাছাকাছি প্রবাহিত হওয়ায় নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চল প্লাবিত হয়।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খায়রুজ্জামান বাদল জানান, তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে আমার ইউনিয়নের নদীতীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করে। ফলে নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের মানুষ দুর্ভোগে পড়েছে। শনিবার থেকে পানি আবারো বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যার আশংকা করছেন তিস্তাবাসী।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনিল কুমার জানান, রোববার সকাল ৬টায় তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ বেড়ে বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার ওপর প্রবাহিত হচ্ছে। একদিনে বিকাল ৩টায়
বিপদসীমার ৮ সে.মি নিচ দিয়ে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে। পানি বাড়া কমার মধ্যেদিয়ে তিস্তাপাড়ে বন্যা দেখা দিয়েছে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার জানান,কিছু পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে তাদের জন্য ত্রাণ সামগ্রী খুব দ্রুত পৌঁছে দেয়া হবে। বন্যা মোকাবেলা করতে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন আমরা প্রস্তুত রয়েছি।
স/এষ্