ওরা আলালের ঘরের দুলাল
রাহুল রাজ ।। ‘আলালের ঘরের দুলাল’ প্যারীচাঁদ মিত্র (টেকচাঁদ ঠাকুর) এর বিখ্যাত উপন্যাস। সেই উপন্যাসের প্রধান চরিত্রে বর্তমানে অবস্থান করছে বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমের প্রতিটি সদস্য। তাই তাদের দিতে হয় না কোনো কৈফিয়ত, ধরাকে সরা জ্ঞান করেন না টিম টাইগারের সদস্যরা। ক্রিকেট ভক্তদের আবেগ নিয়ে খেলতে তাই এতটুকু বাধে না শান্তবাহিনীদের।
শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মতো যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে শেষ ম্যাচ জিতে নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকার চেষ্টা করেছে পুরো বাংলাদেশ দল। সিরিজ হেরেছি তাতে কী? শেষ ম্যাচ তো জয় নিজেদের করেছে বাংলার দামাল ছেলেরা।
এই জয়ে নিজেদের হারানো আত্মবিশ^াস ফিরে পেয়ে বিশ^কাপে জ¦লে উঠে বাঘের গর্জনে হুঙ্কার দেবে এমন প্রত্যাশা করাটা নেহায়েত ছেড়া কাঁথায় শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন দেখার মতো হবে মন্তব্য অনেকের।
তবে শনিরদশা কেটে বিশ^কাপে ভালো করতে সিরিজের শেষ ম্যাচের জয় অনেক গুরুত্বপূূর্ণ ভূমিকা রাখবে বাংলাদেশের জন্য। যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে প্রথম দুই ম্যাচ হেরে সিরিজ খুইয়েছে বাংলাদেশ।
যার জন্য ব্যাপক সামালোচনার শিকার হতে হয় ক্রিকেটারদের। তবে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচের দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে টাইগাররা। সম্মান রক্ষার ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্রকে ১০ উইকেটে উড়িয়ে দিয়েছে সাকিব-মোস্তাফিজরা। শনিবার আগে বাংলাদেশকে ১০৫ রানের সহজ লক্ষ্য দেয় যুক্তরাষ্ট্র। জবাব দিতে নেমে ৫০ বল এবং ১০ উইকেট হাতে থাকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। ৬ উইকেট শিকার করে এই জয়ের অন্যতম নায়ক মোস্তাফিজুর রহমান। সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দুর্দান্ত শুরু করে দুই টাইগার ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম এবং সৌম্য সরকার।
দুজনের ব্যাটে ভর করে পাওয়ার প্লেতে উইকেট শূন্য থেকে ৪৮ রান তুলতে পারে টাইগাররা। দুজনের নিয়ন্ত্রিত ব্যাটিংয়ে জয়ের পথে এগিয়ে যেতে থাকে বাংলাদেশ। ৩৯ বলে ফিফটি তুলে নেন তামিম। শেষ পর্যন্ত সৌম্য সরকারের ২৯ বলের ৪৩ রান এবং তামিমের ৪২ বলের অপরাজিত ৫৮ রানের ইনিংসে ভর করে ৫০ বল এবং ১০ উইকেট হাতে থাকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে দুর্দান্ত শুরু করে যুক্তরাষ্ট্রে দুই ওপেনার শায়ান জাহাঙ্গীর এবং আন্ড্রিস গাউস। দুজনের ব্যাট থেকে আসে ৪৬ রান। পঞ্চম ওভারে গাউসকে ফিরিয়ে টাইগারদের ব্রেকথ্রু এনে সাকিব আল হাসান।
পরের ওভারে ২০ বলে ১৮ রান করে আউট হন আরেক ওপেনার জাহাঙ্গীর। এদিন ইনিংস বড় করতে পারেননি নিতিশ কুমার। ৯ বলে ৩ রান করেন তিনি। এরপর মিলিন্ড কুমার ২০ বলে ৭ রান এবং অ্যারেন জোনেস ৭ বলে ২ করে আউট হন। শ্যাডলি ফন শ্যালকউইককে সঙ্গে নিয়ে রান তুলতে থাকেন কোরি এন্ডারসন।
তবে শ্যাডলি ১৭ বলে ১২ রান এবং ১৮ বলে ১৮ রান করে আউট হন এন্ডারসন। শেষ দিকে জাসদ্বীপ সিং ৭ বলে ৬ রান এবং কেনজিগে শূন্য করে আউট হলে নয় উইকেট হারিয়ে ১০৪ রানের লড়াকু পুঁজি পায় যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ছয় উইকেট শিকার করেন মোস্তাফিজুর রহমান। এ ছাড়াও তানজিম সাকিব, রিশাদ হোসেন এবং সাকিব আল হাসান একটি করে উইকেট নেন।