অধরা টি-টোয়েন্টিতেও জয় পেল বাংলাদেশ
রাহুল রাজ ।। ১ রানে ৩ উইকেট তুলে নিয়ে যে হুঙ্কার বাংলার টাইগারেরা দিনের শুরুতে দিয়েছিলো, সেই হুঙ্কারেই দিন শেষে জয় নিজেদের করে নিয়েই জয়ের উল্লাসে ইতিহাস লেখে বাংলাদেশ। প্রথমে টেস্ট। এরপর ওয়ানডে।
এবার নিউজিল্যান্ডের মাটিতে তাদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টির ‘শূন্য’ কাটাল বাংলাদেশ দল। এর আগে ২০ ওভারের খেলায় নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ১১ ম্যাচ খেলে সব কটিতে হেরেছে বাংলাদেশ। দশম ম্যাচে এসে অধরা জয়ের দেখা পেল নাজমুল হোসেনের দল।
২০২৩ সালে বাংলাদেশ দল তাদের টি-টোয়েন্টি ফর্ম ধরে রেখে নিউজিল্যান্ডকে ১৩৪ রানে থামিয়ে সে রান ৮ বল ও ৫ উইকেট হাতে রেখে টপকে যায়।
এ বছরে ৯টি টি-টোয়েন্টি খেলা বাংলাদেশের ৮ম জয় এটি। ইতিহাস গড়া এই জয়ে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ। মাউন্ট মঙ্গানুইয়ের পর নেপিয়ার।
টেস্টের পর ওয়ানডে। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে কিউইদের বিপক্ষে দুই ফরম্যাটে জয় পাওয়া বাংলাদেশ অপেক্ষায় ছিল টি-টোয়েন্টি জয়ের অতৃপ্তি মেটানোর। অবশেষে এলো সেই দিন।
তিন দিন আগে যে নেপিয়ারে ঐতিহাসিক ওয়ানডে জেতে বাংলাদেশ, গতকাল সেখানেই টি-টোয়েন্টি জয়ের আক্ষেপ ঘোচালেন নাজমুল হোসেনরা। স্বাগতিকদের ৫ উইকেটে হারাল সফরকারীরা। সেদিনের মতো গতকালও বাংলাদেশের জয়ের ভিত গড়ে দেন বোলাররা। যে মাঠে টি-টোয়েন্টিতে প্রথম ইনিংসের ব্যাটিং গড় ২০৭, সেখানে নিউজিল্যান্ডকে ১৩৪ রানে থামান বাংলার বোলাররা।
সেই পথে হেঁটে বাকি আনুষ্ঠানিকতা সারেন ব্যাটাররা। যদিও একেবারে সহজ হয়নি সে কাজটি। সহজ লক্ষ্য টপকাতে ৫ উইকেট হারায় বাংলাদশ। পুরনো রোগে ভুগেছেন ব্যাটাররা। সেট হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি রনি তালুকদার (১০), নাজমুল (১৯), সৌম্য সরকার (২২) ও তাওহিদ হৃদয়রা (১৯)। এক প্রান্ত ধরে খেলা লিটনকে সঙ্গ দিতে পারেননি আফিফ হোসেনও। ৯৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ।
ষষ্ঠ উইকেটে শেখ মেহেদী হাসানের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্য ৪০ রানের জুটিতে ৮ বল হাতে রেখে জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন লিটন। ৩৬ বলে ৪২ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। শেখ মেহেদীর ব্যাট থেকে আসে ১৬ বলে ১৯ রান। এতে ১১টি টি-টোয়েন্টি খেলার পর নিউজিল্যান্ডের মাটিতে প্রথম জয়ের স্বাদ পেল বাংলাদেশ।
এর আগে টস জিতে প্রতিপক্ষকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় বাংলাদেশ। মেহেদী হাসান ইনিংসের প্রথম ওভারেই ফেরান ওপেনার ফিল অ্যালেনকে। পরের ওভারে জোড়া আঘাত শরিফুল ইসলামের। তুলে নেন টিম সেইফার্ট ও গ্লেন ফিলিপসের উইকেট। ১ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বসে কিউইরা। সেখান থেকে চেষ্টা করেও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি স্বাগতিকরা।
ব্যাট চালিয়ে খেলে ২৯ বলে ইনিংস সর্বোচ্চ ৪৮ রান করেন জিমি নিশাম। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৩ রান আসে মিচেল স্যান্টনারের ব্যাট থেকে। তাতে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৩৪ করে নিউজিল্যান্ড। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ তিন উইকেট শিকার করেন শরিফুল ইসলাম।
শেখ মাহেদী ও মোস্তাফিজুর রহমান দুটি করে উইকেট শিকার করেন। এছাড়াও রিশাদ হোসেন ও তানজিম হোসেন সাকিব একটি করে উইকেট নেন। অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করার সুবাদে ম্যাচসেরা নির্বাচিত হন শেখ মাহেদী। শুক্রবার দ্বিতীয় ম্যাচে আবার মুখোমুখি হচ্ছে দুই দল।