শীতে জবুথুবু রাজশাহী জনজীবন চরম দুর্ভোগে দুস্থ ও ছিন্নমূলরা
মঈন উদ্দীন।। গত কয়েকদিন থেকে রাজশাহী অঞ্চলে তীব্র শীত জেঁকে বসেছে। হাড় কাঁপানো শীতে জনজীবনে স্থবিরতা নেমে এসেছে। বাড়ছে শীতজনিত নানা অসুখ বিসুখ।
পৌষের প্রথম দুই দশকে শীত কম থাকলেও শেষ সময় এসে প্রকৃতি জানিয়ে দিচ্ছে শীতের আসল পরিচয়। কুয়াশার পাশাপাশি কনকনে হিমেল হাওয়া বইছে এ অঞ্চলে। এতে একেবারেই বেশি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে না।
শীতবস্ত্রের অভাবে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন দুস্থ ও ছিন্নমূলরা। শীতের তীব্রতা বাড়ায় গরম কাপড় কেনার হিড়িক পড়েছেন। শীত নিবারণের জন্য মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তরা ভিড় করছেন ফুটপাতের দোকানগুলোতে।
গতকাল বিকালেও নগরীর নিউমার্কেট, হকার্স মার্কেট এলাকায় শত শত মানুষকে শীতের কাপড় কিনতে দেখা গেছে। গ্রামগঞ্জেও আগুন জ্বালিয়ে শীত থেকে বাঁচার চেষ্টা করছে মানুষ। এদিকে আবহাওয়া অফিজ জানিয়েছে আরও দুই থেকে তিনদিন সূর্যের দেখা মিলবে না। শীতের তীব্রতা আরও বাড়তে পারে।
বুধবার রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক লতিফা হেলেন জানান, সকাল ৬টায় দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকাল ৯টায় তাপমাত্রা ওঠে ১২.৮ ডিগ্রিতে। আগের দিন মঙ্গলবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ১৭.২ ডিগ্রিতে। আকাশের মেঘ কেটে গেলে তাপমাত্রা আরও নিচে নামবে।
আবহাওয়া অফিস বলছে, সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কমপক্ষে ২০ ডিগ্রির ওপরে থাকা প্রয়োজন। কিন্তু তা থাকছে না। ঘন কুয়াশা ও আকাশে মেঘ থাকায় দিনের অধিকাংশ সময় সূর্যের দেখা মিলছে না। ঘণ্টায় চার থেকে পাঁচ কিলোমিটার বেগে হিমেল হাওয়া বইছে, যা শীতের তীব্রতা আরও বাড়িয়ে তুলছে।
এ কারণে দিনভর শীতে কাহিল হয়ে পড়ছেন রাজশাহী অঞ্চলের মানুষ। সড়ক ও মহাসড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে গাড়ি চলাচল করছে। শীতের প্রকোপে ছিন্নমূল, পথশিশু, বৃদ্ধরা বেশি ভুগছেন। মানুষজন প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না।
বিশেষ করে দিনমজুর ও নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ পড়েছেন চরম বিপাকে। সামান্য উপার্জনে চাল-ডাল জোটানোই যাদের প্রধান লক্ষ্য, শীত নিবারণের পোশাক কিনতে হিমশিম অবস্থা তাদের। দিনের আলো ফুটতে দেরি হওয়ায় কাজে যোগ দিতে পারছেন না শ্রমজীবীরা।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস সহকারী কামাল উদ্দিন বলেন, কুয়াশা ও আকাশে মেঘ থাকার কারণে এখনও সূর্যের দেখা পাওয়া যাচ্ছে না। মঙ্গলাবার গতকাল আড়াইটা থেকে তিনটার দিকে একটু সূর্যের দেখা পাওয়া যায়। আজ এখন পর্যন্ত সূর্যের দেখা পাওয়া মিলেনি। মূলত ঘন কুয়াশা ও হিম বাতাসের জন্য অনেক বেশি শীত অনুভব হচ্ছে।
তবে এই কুয়াশা কেটে গেলে আরেক ধাপ শৈত্যপ্রবাহ শুরু হতে পারে। তখন রাজশাহীর তাপমাত্রাও কমে আসতে পারে। আপাতত কয়েকদিন আবহাওয়া অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলেও জানান তিনি।
স/র