বরিশাল প্রতিনিধি : বাংলাদেশ পুলিশ কনষ্টেবল নিয়োগ ২০১৯ এ নিয়োগের নিমিত্তে পুলিশে ট্রেইনী রিক্রুট কনষ্টেবল (টিআরসি) পদে ঝালকাঠিতে নিজের প্রার্থী নিয়োগ দিতে সরকারি দলের সংসদ সদস্য ঝালকাঠি-১ (রাজাপুর-কাঠালিয়া) আসনের এমপি বজলুল হক হারুন তদবিরে নেমেছেন বলে অভিযোগ উঠছে। এতে বাকি আবেদনকারীরা হতাশ হয়ে পড়েছে।
ঝালকাঠির নবাগত পুলিশ সুপার সুধি সমাবেশের সভায় বলেছেন, কোন দূর্নীতি বানিজ্যের মাধ্যমে কনষ্টেবল নিয়োগ নয়। মাত্র ১০৩ টাকায় ব্যক্তি যোগ্যতা বলে পুলিশ কনষ্টেবল নিয়োগ পাবেন। আর কোন তদবীর ও নয়,এই কনষ্টেবল নিয়োগে, আমি দূর্নীতি করি কিনা অন্যদিকে এই নিয়োগের ব্যাপারে আমার পিছনে গোয়েন্দা সংস্থা ও সাংবাদিকবৃন্দ লেগে থাকুন। কোন দূর্নীতি হলে তা প্রকাশ্যে প্রকাশ করুন। আমাকে দূর্নীতি ধরিয়ে দিন।
অপরদিকে সবকিছু অমান্য করে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগেই বজলুল হক হারুন এমপির সুপারিশ পত্র ঝালকাঠি জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে পাঠিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠছে।
ঝালকাঠি-১ (রাজাপুর-কাঠালিয়া) আসনের সংসদ সদস্য বজলুল হক হারুন গত ২২/০৬/২০১৯ তারিখ ঝালকাঠি পুলিশ সুপারকে দেয়া সুপারিশ পত্র জাতীয় সংসদ সদস্য প্যাডে উল্লেখ করেন, ঝালকাঠি জেলার পুলিশ বিভাগে আপনার অধীনে পুলিশ কনস্টেবল (পুরুষ এবং মহিলা ) পদে কিছুসংখ্যাক লোক নিয়োগ করা হবে । উক্ত পদের জন্য আমার নির্বাচনীয় এলাকা (রাজাপুর-কাঠালিয়া)- এর তালিকা দেওয়া হলো। নিন্মলিখিত প্রার্থীদেরকে পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগ প্রদানের জন্য সুপারিশ করা হলো । সুপারিশ পত্রে প্রার্থীদের নাম,পিতার নাম,গ্রাম, ইউনিয়ন ও উপজেলার নাম উল্লেখ করে রাজাপুর উপজেলার ৯ জন ও কাঠালিয়া উপজেলার আওরাবুনিয়া ইউনিয়নের ২ জন সহ মোট ১১ জনকে সুপারিশ করছেন।
এ বিষয়ে ঝালকাঠি জেলার এক বীর মুক্তেিযাদ্ধা সামাজকি যোগাযোগ মাধ্যম তার ব্যক্তগিত ফেইসবুকে স্ট্যাটাসে জানান, এই সংসদ সদস্য কোন এখতিয়ারে এই বাংলাদশে জাতীয় সংসদ সদস্য প্যাডে পুলশি সুপার মহোদ্বয়কে কোন ক্ষমতা বলে সুপারশি করছেনে। আইনে এর গ্রহন যোগ্যতা কতটুকু। সরকাররে পক্ষ থেেক এর জবাব দিহিতা বর্তমান পেক্ষাপটে খুবই জরুরী হয়ে পরছে ।
এ বিষয়ে সুপ্রিমকোটের্র সিনিয়র এক আইনজীবী বলেন, মন্ত্রী-এমপিরা সরকারি চাকরির নিয়োগের ক্ষেত্রে সুপারিশ বা ডিও দিতে পারেন না। এটা পুরোপুরি অবৈধ। এজন্য প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের নিয়োগকারী কতৃর্পক্ষ আছে। তারা যাচাই-বাছাই করে যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ দেবেন। তবে এ দেশের মন্ত্রী-এমপিরা অবৈধভাবেই ডিও দেন।
এনিয়ে কেউ প্রতিবাদও করেন না। অনেকে মন্ত্রী-এমপিদের এসব বিষয় জেনেও ভয়ে চুপ থাকেন। অথচ ডিওর কারণে সরকারি চাকরির নিয়োগে বঞ্চিত হওয়া ৫ থেকে ১০ জন প্রার্থী যদি হাইকোর্টে গিয়ে ওই নিয়োগ বাতিলের জন্য আবেদন করে, তাহলে সেই নিয়োগ বাতিলের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে।
সংবিধানের ২৯(১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ বা পদ লাভের ক্ষেত্রে সব নাগরিকের জন্য সমান সুযোগের সমতা থাকতে হবে।’ ২৯(২) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘কেবল ধমর্, গোষ্ঠী, বণর্, নারী-পুরুষভেদে বা জন্মস্থানের কারণে কোনো নাগরিক প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ বা পদ লাভের অযোগ্য হইবার কিংবা সেই ক্ষেত্রে তাহার প্রতি বৈষম্য প্রদশর্ন করা যাইবে না।’
স/এষ্