গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় এক এসএসসি পরীক্ষার্থীকে বিবস্ত্র করে ধারণ করা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানোর হুমকির অভিযোগ উঠেছে। এতে ওই ছাত্রী লজ্জায় বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে বলে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন।
কোটালীপাড়া উপজেলার কান্দি ইউনিয়নের কান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। মেয়েটি কোটালীপাড়ার পিঞ্জুরী ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছিল। ঘটনার কারণে তার পরীক্ষা বন্ধ হয়ে গেছে। তার বাবা একজন স্কুলশিক্ষক।
কোটালীপাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘এমন খবর আমাদের কাছে আসেনি। ছাত্রীর পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ দায়ের করা হলে বখাটেদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এদিকে, বখাটেদের ভয়ে থানায় অভিযোগ করতে পারছেন না বলে স্বজনদের ভাষ্য।
স্বজন ও প্রতিবেশীরা জানান, গত রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিষপানের পর মেয়েটিকে প্রথমে কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সেখানে তার অবস্থার উন্নতি হলে তাকে ফের কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ছাত্রীটি জানিয়েছে, রোববার রাতে সে ঘরের বারান্দায় বসে পড়াশোনা করছিল। মা-বাবা ঘরে ঘুমাচ্ছিলেন। একসময় সে বারান্দা থেকে বের হয়ে বাইরে শৌচাগারে যাচ্ছিল। ওই সময় কান্দি গ্রামের শ্রীধাম মণ্ডলের ছেলে সম্রাট মণ্ডল, তার সহযোগী বঙ্কিম বিশ্বাসের ছেলে সজল বিশ্বাস ও নির্মল বসুর ছেলে মিঠু বসু তার মুখ চেপে তুলে শৌচাগারের কাছে নিয়ে যায়।
সেখানে তাকে বিবস্ত্র করে শৌচাগারের বৈদ্যুতিক বাতির আলোতে মেবাইল ফোনে ভিডিও করে এবং ওই ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। এ অপমান সইতে না পেরে ঘটনার পরই সে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করে বলে জানায়।
সম্রাট মণ্ডল তাকে প্রেম নিবেদন করে ব্যর্থ হয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে ওই শিক্ষার্থীর দাবি।
মেয়েটির প্রতিবেশী পিঞ্জুরী গ্রামের হাবিবুর রহমান শেখ বলেন, সম্রাট, মিঠু ও সজল সমবয়সী। তারা মাদক সেবন করে এবং এলাকায় ভবঘুরে বখাটে হিসেবে পরিচিত। এর আগেও তারা একাধিক নারীকে উত্ত্যক্ত ও যৌন হয়রানি করেছে। সম্রাট স্কুলছাত্রীকে দীর্ঘদিন ধরে উত্ত্যক্ত করে আসছিল বলে জানান তিনি।
ওই ছাত্রীর স্কুলশিক্ষক বাবা বলেন, এ ঘটনা ফাঁস করলে বখাটেরা তাদের হত্যার হুমকি দিয়েছে। তাই ভয়ে তিনি থানায় অভিযোগ দায়ের করতে সাহস পাচ্ছেন না। এ ঘটনার পর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় তার মেয়ে এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারছে না বলে জানান।